হাওয়ায় লেখা কবিতা - ১২
সবটাই তরঙ্গের খেলা। সবটাই আকর্ষণ সূত্রের নিয়ম। যখনই আলম্ব হয়েছে বোধ, স্পর্শ না করেও তোমাকে অবলম্বন করতে চেয়েছি বহুবার। ছুঁতে চেয়েছি—খুব খুব ছুঁতে চেয়েছি—যেভাবে কুমারী মেরি ছুঁয়েছেন, প্রভু যিশুর কপাল। প্রভু-কৃপায় জেগে উঠেছে পাষাণ। চারিদিকে পাষাণের বৃষ্টি। সমস্ত পাষাণ ভেদ করে, জন্মান্তর ভেদ করে—আমার জন্য তুমি নিয়ে এসেছ সামান্য শ্যামা চালের পায়েস। প্রকৃত শ্যাম ও শ্যামাগন্ধ তোমার বুকেই। তবু, তোমার বুক থেকে আমাকে ফিরে যেতে হবে জানি দূর... বহুদূর...
যেখান থেকে মানুষ ফেরে না কোনোদিন, সেখান থেকেই তুমি আমাকে ফেরাও মা। ফেরাও ফেরাও বাউলমাতা—ফেরাও ফেরাও তুমি মা অম্বার গান। এই অম্বুবাচী, এই অলীক নির্বাণ—অমল অধ্যাদেশে, আমাকে মানাক...
হাওয়ায় লেখা কবিতা - ১৩
বহুযুগ আগের ভুলে যাওয়া ভাওয়াইয়া গান থেকে জেগে উঠেছে আজ, এক অলৌকিক ভোর। ভোররাতের স্বপ্ন— স্বপ্নে দেখেছি নিজেরই মৃত্যু। সমুদ্রশাস্ত্র থেকে জেনেছি, ক্ষেত্র বিশেষে এমন মৃত্যুও নাকি খুব শুভ। অথচ সমস্ত শুভাশুভ ভুলে, আমরা বেরিয়ে পড়েছি, জলারণ্যে— ভাটিয়ালি গান জাগানো প্রান্তে। প্রান্তে প্রান্তে ফুটে উঠেছে শাপলাবন। শাপলাবন থেকে অজস্র শাপলাপাতা মাছ, আমাদেরকে চিনিয়েছে বিভ্রম। বিভ্রমের মেঘ ধীরে ধীরে স্থানু হয়েছে—শীতল হয়েছে আমাদের পঞ্চমকার সাধন।
সাধন আমার, হীরে গলানো, দু-চোখের প্রায়শ্চিত্ত-জল। সমুদ্রেও তীব্র জ্বরাভাব।
তবু, তুমুল জলযুদ্ধ থেকে ফিরে, তোমাকে দেখতে চেয়েছি আমি আলুথালু জলআলুর খেত।
আমাদেরকে অন্ধ করেছে, জলের কিরণ।