দোঁহা

সুকন্যা সেনগুপ্তর কবিতা

 


...এবং চতুর্থ

ওরা তিনজন-
সন্তোষভাই, অধীর আর ভজনজী

সন্তোষভাইয়ের হৃদয়ঘটিত অসুখ আছে। সেসব অসুখ তীব্র হতে হতে এখন ঘরবন্দি-সমুদ্র ওকে ভাসিয়ে দিতে চায় কখনও সখনও...

অধীর ভারি নেশা করে, কথা বলে খুব। ছিমছাম আকাশও টুপ করে মুখ লুকিয়ে ফেলে। ওর নেশাগ্রস্ত ফোন তীক্ষ্ণ বেজে ওঠে মাঝে মাঝেই...

ভজনজীর একটা পোষা ইঁদুর আছে-হঠাৎই লাফিয়ে মাথার উপর নাচে আবার ছুটে এসে পায়ে পড়ে...

এইসব অবান্তর কাঙালপনার দিকে তুমি নির্বিকার চেয়ে থাকো,
আশ্চর্য সহনীয়তায় শস্য তুলে রাখো...

এই গোটা হেমন্তকাল জুড়ে এক নদীর অপেক্ষায় তুমি,
পূর্বাস্যমুখী দাঁড়িয়ে থাকো...
ভাবতে থাকো পরের লেখা-
হেমন্ত শেষ হলে তোমার অব্যর্থ কলম উড়াল দেয়
তর্জনী-মধ্যমা জুড়ে  নদী বইতে থাকে,
প্রসন্ন সে বৈভবে নিবিষ্ট চরাচর, আশ্চর্য শস্যক্ষেত।

আর...
দূরান্তে ওরা একা
একাকী তিনজন সন্তোষভাই, অধীর আর ভজনজী-
হৃদয়ের ব্যর্থতায়, নিঃশেষিত নেশায়,  হয়রান প্রাত্যহিকে হাওয়ায় হাওয়ায় দেওয়াল বোনে...


কোনো দুর্নিবার দুপুরে

এমন কোনো দুর্নিবার দুপুরে পদ্মপাতায় ভাত বেড়ে দাও তুমি
ভাতের কণা, ব্যঞ্জনের গায়ে পদ্মবীজের গন্ধ লেগে থাকে
একটু একটু করে দাঁতে কেটে নিই
দীর্ঘায়ু সেই ছায়ায় চালকুমড়ো, সজনেফুল ফোটে  আর প্রসন্ন বর্ণমালা
আবছা আকাশে এলোমেলো ছড়িয়ে দিই বর্ণ সব-
তাকে সাজিয়ো না তুমি
বরং এসো এই আশ্চর্য জমিতে
একটা পুকুর খনন করি আমরা
পাড় ঘেঁষে থাকুক ঘোড়ানিম-তেঁতুল, তুলসী আর আম-কাঁঠালের শান্ত পথ

এমন কোনও গাছগাছালি দিনে জুঁইফুল ভাত বেড়ে দাও তুমি, ব্যঞ্জন সাজিয়ে দাও মৃদু বর্ণমালার মত...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন