চরিত্রহীনের ছন্দ
১
মন ছন্দহীন, নিয়মিত ভাঙ্গাগড়া
শরীরে ধরা পড়া আজন্ম উদাসী
সমস্ত ছন্দের মাঝে তুমি কেমন আছ
যেমন ঘোরতর ছন্দবিরোধী
পয়ারে দাঁড়াল একা, হৃদয়ে গোধুলি রেখা
আজও সে স্পর্শ প্রত্যাশী
কে স্পর্শ করে তাকে
কে রাত জেগে থাকে, চামচিকের মত
যৌবন ফিকে হয়ে আসে
নারীত্ব রং চটে আসে
অন্তমিল থেকে যায় অক্ষত
সাঁঝের আঁচল বুক থেকে সরে যায়
সন্তর্পণে
কেউ নেই জানে
আয়নার বধির কোনে
নেই কারও আঙ্গুলের সঞ্চার
পাতাহীন-ফুলহীন গাছে
বারন্দায় মেলা রঙ্গীন অন্তর্বাস
সশরীরে জ্বলছে সিগারেট
দাবানলের প্রাক্ প্রৌঢ় আঁচে
২
মুকুটহীন সম্রাট যেন
টগর গাছের পাশে
লাস্যময়ী নারী
বিভ্রম ভাঙ্গে
বারুদের উষ্ণ বাতাসে
যুদ্ধ-আদর
ঢেউয়ের চূড়ায়
জ্বলে ওঠে ফসফরাস বারবার
তবু শমন আসলে জানি
সঙ্ঘের আশ্রয় দরকার
কোমরের মাপ
খালি পেটে নিতে নেই
জটপাকা যৌবন
কোনদিন বুঝল না
জটপাকা যৌবন
কোনদিন বুঝল না
প্রেমপত্রের নিচে
‘শুধু তোমারই’
ভালবাসা নয়
ভীরু এক আত্মসমর্পণ
শব্দধারা
১
যা বুঝি না, যা জানি না
তা লেখার বৃথা চেষ্টা নয় আর
এ আত্মজীবনী যেন ঝড়ে পড়া
শব্দধারা
মেঘ রোদ বৃষ্টি বাতাস
অচেনা মানুষ আর
জ্যোৎস্নার অসুখ মাখানো বালিশ
শুয়ে আছে স্বপ্ন
সারারাত জেগে জড়ো করা তার জঞ্জাল
অক্ষর কখনও বস্তির মতো গা ঘেষাঘেষি
কলোনির ঝগড়া
একফালি চিন্তার ব্যালকোনিটুকু নেই
কখনও অসম্ভব ভালবাসা
অদ্ভুত অশরীরী প্রেম
মাঝে থাকে দিগন্তের দূরত্ব
কেন্দ্র বিন্দুতে কে সে আজ বড় কথা নয়
দীঘির শান্তি বিলাচ্ছে সাদা হাঁস
গোল হয়ে ঘুরতে থাকা খেলায়
বালিকার হাসি মিলিয়ে যাচ্ছে
আবার ফিরে আসছে শিমুল তুলোয়।
২
শশ্মানের ধারে যে বটগাছ
তার অসংখ্য ঝুরি
সেকি সত্যকে অস্বীকার করে
শালিকের ঐক্যতান কখন
মিশে গেছে দিনের অস্থিরতার সাথে
রাতে ঘুমের প্রয়োজন হয় নি
তুমি দুবাহুর মাঝে থাকায়
অন্ত্যমিল অনাবশ্যক ছিল
চাঁদের আলো উপেক্ষা করে
জানলা দিয়ে পড়েছিল স্নিগ্ধ অন্ধকার
আঁধারের আরাম
এভাবে শব্দ ক্ষণিক হয়ে দাঁড়ায়
অর্থের বিনির্মাণ করে
প্রেমের পাশে ডেকে আনে অন্ধকার
মৃত্যুর পাশে ডেকে আনে আলো
আর আলোর গহ্বরে পৌঁছে খুঁজে পায়
অসম্ভব শূণ্যতা।
