দোঁহা

অমিত মজুমদারের কবিতা


গ্রহণকাল

তুমি চামুণ্ডা সেজে পুজো পর্বে  প্রতিদিনই বদলে নাও মালা
গলা থেকে নেমে আসা মুণ্ডুমালার প্রতিটা মাথা আমার চেনা

প্রসাদঘরের গোপন সুড়ঙ্গে ধরে রাখা আছে বিস্তীর্ণ এক দেশ
যেখানে গাছে গাছে ঝুলে থাকে সস্তা জনগণের ভবিষ্যৎ বার্তা
আলতো ঝাড়া দিলেই ঝরে পড়তে থাকে উল্লেখযোগ্য শব
রাজনৈতিক ব্যবসায় প্রকাশ্যে কেটে নেয়া হয় তাদের মাথা
তুমি মালা পরার সময় একবারও চেয়ে দেখো না তাদের মুখ।
তারা কি নির্দয় ছিন্নমস্তার অভিশাপ কুড়িয়েছে কখনও?

তোমার চরণে ভক্তেরা ফুল ছুঁড়ে দেবার সময় ওরা দেখে
বোমারু বিমানের মতো গতি নিয়ে এগিয়ে আসছে মৃত্যুসংখ্যা
মৃতের উপত্যকায় দাঁড়ালে কাটা মাথারও মৃত্যু ভয় এসে যায়
সেও কামনা করে কোনও একদিন গিলে নেবে পরিপূর্ণ চাঁদ।

হে অমা, তুমি উৎপাদকে বিশ্লেষণ করো আমার রক্তগন্ধী ঠোঁট
কাটা মাথা থেকে গড়ানো রক্ত আমিও কিছুটা টেনে এসেছি।


তুমি কালী তুমি তারা

যেটুকু আগুন আছে সীমাহীন দ্রাঘিমার গানে
সুরের বেদনা থাকে ছাইচাপা সে বুকের টানে।
শোয়ানো শ্মশান ভূমি সব মৃতদেহ হাতে গোনা
তৃতীয় নয়ন থেকে উঠে আসে মৃগয়া  বাসনা।
নবীন শামুকখোল ঢুকে যায় মাথা থেকে লেজ
তুমিও কুসুম সেজে ঢেলে দাও সুনিপুণ তেজ।
গলায় উপচে আসে কায়াহীন মাথা ছাড়া জিভ
আমার ভূমিকা শুধু পদতলে শুয়ে থাকা শিব।
আমাকে ভেংচি কেটে সরে যায় জীবনের সীমা
বদন ধুইয়ে দিতে গায়ে লাগে গোপন কালিমা।
তুমি কালী তুমি তারা ছিন্ন দেহে ভিন্ন অভিসার
আষাঢ়ে কাহিনী না সে বাস্তুতন্ত্র বড়ো ক্ষুরধার।
ক্ষুরের চাহিদা থাকে কেটে দিতে উচ্চতর গলা
গলাকে গলায় দিয়ে তোমার উদাসী পথ চলা।
বেশ তো, এগিয়ে চলো পরিপাটি কৃষ্ণবর্ণ ধরে
তোমার সচল জিভে আমি থাকি উপবাস করে৷

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন