দোঁহা

জয়রাজ পালের কবিতা


বিবর্তন

বাবার ধৈর্য্য ধরে রেখেছি ইলেক্ট্রিক কেটলিতে

কাজের থেকে ফেরার পর ঠিক এক বালতি হিমশীতল জলে মিশিয়ে স্নান করি।
উষ্ণতার কাজটা হয়ে যায়।

মায়ের আঁচলের বাতাস
আর একটু ঠাণ্ডা করে নিয়েছি ভিড়বাসে ঝরে পড়া ঘামে।
ক্লান্তির কাছে অসহায় ওই আঁচলেই যে বয়ে চলে
পদ্মা, মেঘনা, যমুনা অবিরল...

জানালার পাশে দাঁড়িয়ে ছায়া দেওয়া বাবা
আদরে আগলে রাখা মা দেখছে
গর্বে তাঁদের বুক ভরে উঠছে, কাঁধ চওড়া হচ্ছে;
চোখে সুখের অশ্রু, হৃদয়ে কোমল আনন্দ

রোদ, ঝড়, বৃষ্টিকে কেমন পেছনে ফেলে দিয়েছে তাঁদের সন্তান...


প্রথম প্রেম

দেখি মায়াগ্রস্ত সেই ফুল;
প্রথম ভালোবাসায় পা দেবার মুহুর্ত
আকাশের যত আলো, নদীর যত জল চুঁইয়ে চুঁইয়ে নেমে আসে দু'চোখ জুড়ে...

রাগ অভিমানে ছড়িয়ে পড়ে একরাশ প্রশান্তির আবেশ।
বুকের মধ্যে কি যেন এক তোলপাড় করা অনুভূতি!

যে অনুভূতিতে সবকিছু বদলে যায়।
ভয় আর দ্বিধার পাহাড় পেরিয়ে থরথর হাতেই বই বা খাতার ভাঁজে নীল খামের চিঠিটি গুঁজে দেওয়া,
আকাশকুসুম কল্পনায় কেমন বোকা বোকা উচ্ছাস...

এরপর? প্রবল উত্তেজনা নিয়ে প্রত্যাশিত উত্তরের অপেক্ষা—কি জানি কী হয়!

হয়তো বসন্তের নির্মল হাওয়ায় পাশাপাশি হেঁটে যাওয়া,
মনের অজান্তে আলতো করে ছুঁয়ে দেখা
আকাশ–বাতাস–ফুল–পাখি–লতাপাতার কথা বলা।

আর এর ফাঁকে পৃথিবীর সবচেয়ে আকাঙ্খিত, প্রচন্ড ভালো লাগার শব্দটি-
‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’।
পাখির কলকাকলীর মতো মধুর এই গান, এই স্বপ্নগুলো...

তখন সত্যিই তীব্র কষ্টের মধ্যেও সুখজ্যোৎস্না হয়ে ফুটে ওঠে একটু একটু...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন