দোঁহা

নার্গিস পারভিনের কবিতা

 


সেই চেনা আলপথ
 
দোঁয়াশের আলপথ পেরিয়ে,
শীতের ওম নিতে নিতে এসে পড়েছি সেই মাঠে,
যেখানে সোনালি আমন ধানের গোল ঝাঁকা, পিঠ পেতে রোদ সেঁকে।
ধান কুড়োনি মেয়েদের আঁচলে দুপুর বন্দী ধেনো গন্ধ মেখে;
ফসল শূন্য জমিতে রিক্ত নাড়াদের উন্মুখ প্রতীক্ষা-
পশ্চিম পাড়ের লালচে আভায় মনখারাপের বিকেল 
উষ্ণতা পেতে চেয়ে ঝুপ করে মিশে যায় 
খড়ের আগুন পোহানো সন্ধ্যায়। 
গাঁয়ের দামাল ছেলের কন্ঠে পরবের গীদ উষ্ণতা ছড়ায়।
ফসল উঠে গেলে নবান্নের অবসরে, 
ফেলে আসা মন সংক্রান্তি খুঁজে ফেরে 
কিশোরী আঙিনায়, ধান ভরা খামারে!



আবর্ত

সজনে গাছে ফুল ধরার দিনে 
গায়ে পাতলা চাদর জড়িয়ে 
তোমার সামনে দাঁড়ালেই 
বাতাসে ছড়িয়ে যেত 
ছিঁড়ে ফেলা চিঠির টুকরোগুলো। 

একদিন ছিটেবেড়ার ঘরের পাঁজরে 
পেঁচিয়ে যাওয়া গোখরো ফণা তুলতেই, 
ভয় আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলো! 
সেই থেকে রাতবিরেতে কতবার 
ফিরে ফিরে গেছো বাড়ির চারপাশে, 
আমার নিশ্চিত ঘুমের আড়ালে।
 
মুঠোভর্তি আলো এনে দেবে 
এইতো চাওয়া তোমার। 
আমিও ঠিক বুঝতে পারিনা
প্রেমে ব্যর্থতার সংজ্ঞা কি! 
কেবল সময়ের আবর্তে আজও 
একটা অপঠিত পত্র থেকে উড়ে যায় 
হাজার উন্মুখ পাখি, 
আলোর ঠিকানায়! 
তখন পৃথিবীর গাছে গাছে 
সজনে ফুলের মেলা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন