দোঁহা

শাশ্বত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা

 



উত্থাসনী 

ঘোর কালো দেখে
কামে ভেসে যাই মাগো
কোথায় করাল রূপ, শঙ্করী তোমার
আমাকে গ্রহণ করো, বলি রূপে গিলে
এতো অন্ধকার কেন সাজিয়েছো
আমি কি একাই চাই, শয্যায় তোমায়?
আমি কি একাই শব, শ্মশান-গভীরে?
দেবী, তুমি ডেকো বারংবার
হয়ো শুদ্ধতর আমার নামের জপে
কে আর খুঁজেছে বলো, এ আশ্বিনমাসে
আমি যে খুঁজেছি কালী এই পোড়া দেশে
তোমাকে আমার মাঝে
আমাকে তোমার মাঝে
হায়রে বাঙ্গালা মদ
হায়রে বিড়ির টান
চোখ লাল হয়ে আসে মাগো
পান্নালাল গান, তোমার মধুর নাম
কি তোমার করুণা?
কে তোমাকে পান?
মিলিয়ে গিয়েছো তুমি বারবার
অতিবৃদ্ধ শৃগালের দলে
তোমার বাহন যায় পুতগন্ধে, অন্ধ অস্তাচলে
তুমি যাও তার পিছুপিছু
এই যে শ্মশান-বোধ মাগো
কিভাবে প্রোথিত হল তরুণের মনে?
তুমি কি টেনেছো তাকে
স্যাঙাৎ আমার, দিনরাত
মা, মা বলে ডাকে!


কালো মেয়ে

বুকের উপর পা রেখেছে
কাজল কালো মেয়ে
কালের ঘোরে কালোই ঘোরে
ধুর্জটি তার চুলের ভিতর উদাস হাওয়ায় খেলা করে
অযুত চোখে মুণ্ড মালায় খিলখিলিয়ে হাসতে থাকে
হেসেই ওঠে, জগত দোলে
দুলেই ওঠে ওর নাচনের ভঙ্গিমাতে
দীর্ঘ জিভে, রক্তে কাহার লাল এঁকেছে
লাল এঁকেছে, চোখের পাতায়
অপূর্ব তার চোখ দুখানি
চোখ দুখানি ভয়াল রাগে আমার দিকে
দৃষ্টি হানে, উপর থেকে নীচের দিকে
নীচেই আমি, দীঘল দুটি পায়ের তলায়
আমার যে মুখ, আমার যে বুক লাল হয়ে যায়,
লাল হয়ে যায়, আলতা রাঙা দীঘল দুটি পায়ের তলায়
রক্ত জবায়, রক্ত জবায়
আমার যে শব, শিব হল আজ
দুইটি কালো পায়ের তলায়

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন