দোঁহা

শুভদীপ রায়ের কবিতা

 


সকলই তোমারই ইচ্ছা

ব্রহ্মান্ড হাতে নিয়ে প্রশ্ন জাগে-নির্মিত গাণিতিক মতে

সম্ভাবনার সূত্রে জন্ম-মৃত্যু এ মুহূর্তে দুইই উপস্থিত,

এমন সংকটকালে পরামর্শ নিতে গিয়ে দেখে,

চারপাশে নিষ্প্রাণ করোটির ত্রস্ত-অন্ধ স্তুতি,

ঐশী চেতনার সম্পূর্ণ পরিপন্থী বলে-যে সংশয় বিষপাত্রে নিরঞ্জন হত-

আজ তাই বুকে নিয়ে নিদ্রামগ্ন ক্লান্ত মহাকাল।

আত্মনীরিক্ষণে গূঢ় বিভ্রান্তি জাগে বারবার-

একদিকে পাপ-পুণ্য, প্রায়শ্চিত্ত, আইন-আচার,

তখনই দু'চোখ ভরে করুণার সুধাপাত্র নিয়ে মা এসে নিতে চায় সব পাপভার-


সিদ্ধান্তহীনতার এইসব সৌখিন বিষুব প্রহরে

দগদগে ঘা আর কালসিটে নিয়ে

স্বামীর চিতার পাশে শরীর বিক্রি করে নিয়মের মতো

দুধ কিনে ঘরে ফেরে মানুষের বৌ…



তুই নাকি মা দয়াময়ী

যখন মায়ের কাছে গিয়ে বললাম-আমায় বিবেক দাও, বৈরাগ্য দাও-

মা ক্ষেপে উঠলো রাগে,

তার আনখশির করালরূপে যেন খেলে গেল হাজারখানেক ফার্নেস-

আমি কিছুই না বুঝে পালিয়ে এলাম

সেই থেকে পালিয়েই বেরাচ্ছি-নিজের ভেতর ঢুকতে ঢুকতে

কখন ভুলেই এসেছি গড়িয়াহাটের ব্রিজের কথা,

কিম্বা আরো দূরে মফস্বল ছাড়িয়ে

যেখানে শহুরে রিলিফ গিয়ে পৌঁছায় না আম্ফানের পরে,

কিম্বা গাজার সেইসব শরণার্থী শিবিরের পাশে ছিন্নভিন্ন শিশুটির শরীর কুড়িয়ে

যে মা অবিশ্রামে ডেকে চলেছে তোমায়…

আবার দেখা হলে আমি ওদের কথাই বলব-

দেখি এবারে কীভাবে ফেরাও আমায়!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন