দোঁহা

বিশ্বজিৎ বাউনার কবিতা


 

প্রেতের কাকুতি

রচিত হাড়ে আজ জবুথবু সে সরীসৃপ মাটি,
ভাঙা মেঘের তিলক ঝরে যায় মৃত অভিমুখে।
শূন্যে দুলে ওঠে সেই তালপাতায় তৈরি খোঁপাটি-
আমি ভ্রান্ত ময়ূরের মতো ভিজে যাই পোষ্য সুখে।
তালুজুড়ে আজ প্রেরিত ছায়া, ভাষা তার পাথেয়।
হিরণ্য আঁধারের অহমিকা চলকায় প্রস্তাবে-
বাষ্পীয় চর জলছবি আঁকে, তাকে কে করে হেয়?
বীজের আবরণ ভেঙে ভেতরে মহীরুহ পাবে?
এত নিনাদ উদ্যোগী দিকে দিকে মাতৃহারা স্থিতি,
ডিমের জড়তা ভেঙে দেবে নেই সেই প্রিয় তাপ!
অন্যের খোলস গায়ে বাতাসেরা হাসে যথারীতি।
হৃদয়ে খেদ নেই, মুঠি খোঁজে সাফল্যের মেরাপ!
অভিনীত প্রহরে পাখি ওড়ে, ডানা বোঝাই ছাই।
বধ্য খেদে প্রেতেরা আজো বলে: মাতৃভাষাকে চাই।


ভাষার ক্ষত

পরিণতি আনে সভ্য কুঠার, কাঁসার চাঁদ ওঠে।
পাতাশূন্য প্রগতির ডালে দোল খায় ভন্ড কুঁড়ি।
আমাদের তোষামোদে খালি লুঠের বাগিচা জোটে,
লূতাতন্তুন্যায় অভিলাষে নিজেরাই ফের পুড়ি।
আজ এই আত্মধ্বংসের বেলা, চোখে লেপিত আলো।
সর্পিল আড়ি দিয়ে ঢুকে আসে ফণার বিকিরণ।
গমন স্বাক্ষরে কারা চাপা দেয় গ্রহণীয় কালো?
মিশরীয় মৌনতায় হৃদয় আজ হত্যাপ্রবণ।
আজ ভাষা-বনে মারীচের হুটোপুটি, সে স্বাধীন!
তার নির্মিত ছটায় পুড়ে যায় আরোগ্যের চোখ।
মাতৃদুগ্ধের কাছে আজ পিটুলির পাখি সৌখিন,
চোরাবালিতেই পা ডুবিয়ে তার, বলি-'ভালো হোক'!
পর্দায় ঢেকে ভাঙা আয়নায় মুখ দেখে কি কেউ?
ভাষার ক্ষত উগরে শুধু বালি রেখে গেছে ঢেউ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন