দোঁহা

পূর্ণেন্দু মিশ্রর কবিতা

 


হলুদ পলাশ, রক্ত পলাশ        

ওই যে পলাশ কুড়োনো মেয়েটি?
ওই যার পাশ দিয়ে ধূলো উড়িয়ে হেঁটে যায়
মেঘকালো মহিষ।
শিংয়ে ঘাসমাটির ঘ্রাণ লেগে,
ওর ঠিক পাশে যেন সহজপাঠের উল্লাপাড়ার মাঠ।
কটা মোরগ ঝুঁটি দুলিয়ে দুলিয়ে খুঁটে খায় ওর গ্রামের মনখারাপ,
আর মাঝে মাঝেই তাই আনন্দে কঁকিয়ে ওঠে মোরগ।
আহা দুপুর, বিশুদ্ধ দুপুর সোনা গলিয়ে- ডুবিয়ে রেখেছো কামিনী ফুলের বাসে।
এই বাংলায় এই যেথা হলুদ পলাশ, রক্ত পলাশ খসে।



বাংলা ভাষা     
 
বাংলা ভাষা বলতে গেলেই কামিনী, বকুল,বেলী ফুলের সুবাস।
ঘুলঘুলি থেকে ছড়িয়ে আসা চড়ুইপাখির স্বর। বাংলা ভাষা বলতে গেলেই শরৎ, রবি, বিভূতি, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আর এই সব চড়ক, গাজন, ভাদু-টুসুর, দোল।
বাংলা ভাষা বলতে গেলেই সবুজ ধানের ঘ্রাণ,
শ্রাবণ কালোয় মুক্তো ঝরা মন কেমনের বারিষ।
বাংলায় তোমায় বলতে গেলে কাজল হরিণ চোখ,
কল্পনায় আঁকা আমার বিশুদ্ধ চিত্রলিপি।
বাংলা মানে শিশির ভেজা রামপ্রসাদী ভোর,
বাউল, ভাওয়াই, ভাটিয়ালি, কত যে তার রূপ।
শ্রী কৃষ্ণকীর্তন ভাসে বাজে রে হরির বোল,
গাহে সবাই গাহে দুহাত তুলে শ্রী চৈতন্য স্বরুপ।
কখনো বা বাংলা আমার রণডঙ্কা প্রতিবাদে,
বিদ্যাধরী, রায়মঙ্গল যেমন তিস্তা, তোর্সার রোখ ।
ছৌ যেন তার নৃত্য ভঙ্গিমায় এমন ভাষাটি,
আকাশ ভরা সূর্য তারা আলো দেখার চোখ।





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন