দু’ পায়ে দাঁড়ানোর সাহস
যদিও মজ্জায় ঘা, ক্ষত থেকে রক্ত ঝরে
অনুকম্পা আর অনুগ্রহের দান
অসহ্য বমির মতো;
তবু সেই অন্ধকার কোণে পড়েছিল এতদিন
ব্যবহার হতে হতে গা ঘেন্না করে
চতুষ্পদ মনে হয় নিজেকে, নিতান্তই ক্লীব…
আজ সব দেনা শেষ
ক্রীতদাস জীবন থেকে মুক্তির ইশারা;
নিজেকেই খুঁজে নিতে হবে প্রতিবাদ, আর
সোজা হয়ে দু’পায়ে দাঁড়াবার অসম সাহস!
অন্ধ ভবিতব্য জেগে থাকে
কেন যেন চলে গেলে এই পথ দিয়ে মধ্যরাতে
কেন গেলে মনে নেই আজ, তবু মনে আছে ঠিক
তারারা কেঁপে উঠেছে, গাছেদের ছায়ারা নিশ্চুপ
লাল ধুলো পায়ে মেখে, পদচিহ্ন ফেলে ফেলে এই
নিষ্ক্রমণ ভারাক্রান্ত একটা অলৌকিক যাত্রাপথ
আমার প্রেমের ক্ষতে উঁচুনিচু পাথর বিছায়;
অগম্য রাস্তার ধারে স্মৃতিচিহ্ন নীল হয়ে জ্বলে
পারানির কড়ি হাতে ফেরিঘাটে কারা যেন আছে
আমার আত্মার বন্ধু, হাত ধরে নেবে নিরুদ্দেশ
সকল ভ্রমণ শেষে পান্থশালা বসে আছে চুপ;
যে গেল তার ছায়ায় পরস্পর জড়াজড়ি করে
মৃত প্রেম শুয়ে আছে; ক্ষত রক্ত কালশিটে দাগ
সময়ের স্রোত বয়ে ভ্রমণের নৌকো ভাসে জলে
তারারা কাঁপে না আর, অন্ধ ভবিতব্য জাগে শুধু!
নাবিকের নাভিশ্বাস
নিমগ্ন সন্ধ্যার জট গলিঘুঁজি খুঁজে মরে যেন
ভগ্নচাঁদ উঁকি দিয়ে মেঘের আড়ালে ঢুকে যায়
তৃতীয় নয়ন খুঁজে নেয় প্যাঁচারা অবলীলায়
জীবনানন্দের উট গ্রীবায় নিস্তব্ধতা এঁকেছে
এইবার ষড়যন্ত্রের যত গুপ্ত আচ্ছাদন আছে
খুলে নিয়ে অনাবৃত উদ্দেশ্যের নিহিত বিধান
বড় বেশি প্রকাশিত বেআব্রু আমাদের দর্পণ
প্রতিবিম্ব ভেসে ওঠে মুকুরিত বিসদৃশ্য ছবি!
জনান্তিকে চুপিচুপি কথাবার্তা গাঢ় হয়ে আসে
সময় পেতেছে কান, গল্পগাথা নিরুদ্দেশে যায়
উত্তুরে হাওয়ার সাথে পুরনো স্মৃতিচিহ্ন উধাও
ফেরিঘাটে দেখা হয় কতশত ভিনদেশি ভ্রমণ
নোঙর ছিঁড়েছে তবু, যত্রাপথ বালুময় হল
চড়ার বিস্তার দেখে নাবিকের নাভিশ্বাস ওঠে!