চতুর্দোলা
আগুন সাঁকো জয়িতা ম্যাডাম পেরিয়ে গেলেন।
উল্টো ঘড়ি, ডাইনে পরা। স্নিগ্ধ চিবুক,
চলনটি তাও ছন্নছাড়া! হাসির বোকেট
জয়িতা ম্যাডাম, পৃথিবীটা ঠিক গোল ছিল কি?
না হলে তো ফের দেখাই হতো
চায়ের দোকান, মাছের বাজার
ড্রয়িং ক্লাসে মেয়ের সাথে।
একটু দাঁড়ান
আগুন সাঁকো নিভিয়ে দিলে
শশ্মাণ কেমন শান্ত পুরুষ
একটিবার দেখেই যাবেন।
একটু দাঁড়ান কয়েকটা যুগ!
দেহতত্ত্বের গান ছিঁড়ে
বেরিয়ে আসে আশ্চর্য দুপুর।
যার জলে বহমান বাউল কঙ্কাল কাঙালিনীর কাছে
দিয়ে এসেছে দোতারা বৈরাগ্য।
যার সিঁড়ি বাধা ঘাটে
মা'ঠাকরুন স্নান সেরে ভেজা চুলে
উঠে যেতেন সুবর্ণ মহলে, রূপে জ্বলত পারদ পুরুষ।
আর কয়েত বেলের গাছ ভয়ে ভয়ে কাঁপাতো আঙুল!
মা ঠাকরুনের জল ছাপে আঁকা হতো
নির্জনতা। মফস্বলি বর্ষার দাগে দগ্ধ দেওয়াল
এখনো তাঁর নোলক ভেবে চন্দ্রোদয় দেখো।
হাহাকারে বসে থাকে নদী ও বনান্তর!
আমাদের পরিচয় পত্র হারিয়ে গেছে।
শুধু চামড়ায় ঢাকা মাংস আর
মাংসের আদর জড়িত কিছু সম্পর্কে কার্বনকপি নিয়ে বেঁচে আছি।
বাজার যাচ্ছি। ট্রেন ধরছি। ফুটে উঠছি বসন্তের
শেয়ারে ও শাওয়ারে নব নব কলেবরে!
হাঁপিয়ে হাঁপিয়ে সঙ্গম শেষে
নরক বাহ নদীর মতো নেতিয়ে পড়ছি
দারিদ্র্য সীমারেখার নীচে
একচিলতে উঠোনে।
জমাট বেঁধে আছি। গলন অভিমানে।
ডোমনা পাহাড়ের মতো জটিল
পাথুরে আলোচনায়
কাঁটা আর বৈকল্য নিয়ে।
স্বাদ ছিলো গলনাঙ্ক ছুঁইয়ে দিতে
কেউ কপালে তুলে ধরবে আধো চন্দ্রোদয়
দুই চোখে দেবে ধানদুব্বো পরমায়ু।
দুই ঠোঁট চুম্বন ক্ষত!
আর তার আবেশেই সব অভিমানের মোম খুলে
গলে যাবো
নদীর মতো উচ্ছল চিত্রপট
দুই পাশে স্মৃতি বিজড়িত নারী ও পুরুষ
পাখি হয়ে যাবে একে একে!
