দোঁহা

অরিত্র দ্বিবেদীর কবিতা

 


 
পিতৃপরিচয়

যে জানালা বেয়ে উঠে এসেছে তড়িতের জাপটে ধরা
তার ধুলো খড়খড়ির কাছে মুখটি এনে তোকে শুঁকেছি রোদ!
বহুদিন হল পৃথিবী ভালোবাসেনি, জনশূন্য 
মাঠ, প্রান্তর আদিগন্ত পড়ে থেকেছে পরাজয় জুড়ে
স্বর রুদ্ধ হয়ে ধুলোবালি বসে আছি মনোমত
যা কিছু ধুলো, খিদে-তেষ্টা-স্বমেহন, অতৃপ্ত, বাকি...

বুড়ো চিনার গাছের পিশাচী, এখনও একটি পাতা বাকি
তার ফাঁকে ফাঁকে নিজস্ব হত্যার লিপি, আত্মাহুতি ধরা।
বইপত্র, নমস্কার, প্রতিনমস্কার আকৃতি মনোমত
হয়নি মোটেই, সামাজিক দরজা দুটো ঠেলে ঠেলে ঢোকে রোদ
নিংড়ে নেয় এক বিন্দু, আনন্দে কঁকিয়ে ওঠা জুড়ে
ছেলেমানুষ শুয়ে থাকে রমণ; একা, খুব জনশূন্য!

তবু তোকে ভালোবাসি রোদ, ভাল লাগে জনশূন্য 
প্রতিস্পর্ধা, কোনো প্রতিযোগী নেই, কেউ নেই বাকি
শুধু আমি আর তুই রাঙানো, অবিরাম চলাচল জুড়ে
জন্ম নেয় কতশত পারাপার, তোর পোড়া গর্ভে ধরা
নিজের সন্তান! তাদের মা যে তুই, দিগন্ত জানালার রোদ
তোকে পেয়েছি, তড়িত চলাচলে, তৃপ্তি, মনোমত

জানালার প্রান্তে ভয়, ভয় নম্র; ঘাতকের মনোমত
এই বুঝি শব, চলে যায় দিন, হয়ে যাই জনশূন্য
চিনারের শেষ পাতা ক্ষয়, তুই যেন বুকে এসে উঠিস রোদ
প্রতি চুম্বনে লিখে দিই ঘি, বুঝি, তোর জ্বলে ওঠা বাকি;
আত্মনিবেদনহীন তোকে দু'হাতে নরম জড়িয়ে ধরা
প্রভৃতি লেখা হয়ে থাকুক, সরু চিতাকাঠ জুড়ে জুড়ে!

ধর্ম অনুসারে, আজ, নরকে নামার অনুমতি জুড়ে
'লিপি চিত্রিত', কাঁথায় বস্ত্রহীন স্পর্শ কিছু মনোমত
কখনওবা আগুন রূপে ভালোবেসেছে আয়ুমুখ, ধরা ---
ধূলিধূসরিত ইতিহাস মুছে ফেলে জনশূন্য
হয়েছে পিশাচী। এখনও যে তোর স্তন ছুঁয়ে দেখা বাকি
এখন তোতে গম্বুজারোপণ প্রশস্ত আমি জানি, রোদ।

তোর শিৎকারে অতৃপ্তি নেই, তবু আলিঙ্গনে বাঁক, রোদ
আমার সাক্ষ্য দিতে পারা শুধু সৃষ্টির, রমণ খেদ জুড়ে
শুনি পতনের শব্দ; সন্তানের পিতৃপরিচয় বাকি!
ওদের সাজিয়ে দিবি প্রেমে, ক্ষোভে, যাচ্ঞাহীন, মনোমত?
ডেকে বলিস চিনার পাতায় লেখা ইতিহাস, জনশূন্য,
ঊর্ণাময় কোনো স্বপ্নের সমান, হাতে হাতে পরিচয় ধরা

শান্ত কোলাহল রোদ, তবু স্তম্ভিত জরায়--মনোমত
জন্যশূন্য সব বালুকায় আলোময় হাঁটাহাঁটি জুড়ে
তোর কেন ওদের শেখানো বাকি, ভালোবেসে জাপটে ধরা?







একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন