দোঁহা

শুভদীপ রায়ের কবিতা

 


প্লাবিতা


যখন রেডিও জুড়ে খবর হল, শামিনার বর গেছে মাছ ধরতে।

আতুরে শুয়েই তার দুই চোখে সমুদ্র নামে,

দুধের বাচ্চা আর বাবা বলে ডাকবে না, হায়!

শামিনা জানে না কাল কী খাবে, থাকবে কোথায়?

“এর চেয়ে ভালো হতো বুঝি, ঢেউ যদি এদিকেও এসে

আমাদেরও সাথে  নিয়ে যেত”

উঠোনে এখন বুঝি জলঢোড়া, দাঁড়াশের ভিড়

কাঁকড়া বা দু’একটা মাছ এই দিয়ে আরো ক’টা দিন;

বিষ খেয়ে মরে যাবে নাকি, সেইতো দু’দিন পরে তাকে

মানুষের মতো জন্তুরা রোজ এসে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাবে,

নাকি ঘরে আগুন লাগবে, ঘরটারও ভাড়া দেওয়া বাকি।

তিনকূলে কেউ নেই ওর…বাচ্চাটা খিদেয় কেঁদে ওঠে,

শামিনা বারুদ ভরা বুকে তাকে তবে আগুন খাওয়াবে?



বন্যাত্রাণ


প্রতিবার তোমাদের নিস্তব্ধতায় আমাদের সব ভেসে যায়, 

যেটুকু কুড়িয়ে এনে ঘর বাঁধি ভাবি, সেই ঘরও।

আমাদের যতকিছু নথি নাগরিক বৈধতা দিত,

ইতিহাস সেসব গিলেছে, উদগারে উঠে আসে শোক-

হাঁড়িতে চাপিয়ে সেটুকুই রাস্তার পাশে ফোটে- আমাদের বাঁচার হিসাব

প্রতিদিন পুলিশেরা আসে, প্রতিদিন গোলাভরা ধান

উবে যায়, সুখে কোনো ধনী ব্যবসায়ী আরো আরো আরো ধার করে।

আমাদের যত রক্ত শহরের প্রতি ঘরে লাগে,

আমাদের সাথে নিয়ে বন্যাই মুছে দিয়ে যাবে।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন