কর্কটক্রান্তি
কর্কটক্রান্তির দুপুরে বৃশ্চিক দংশন করে
আয় কবুতর আয় জড়ানো আদরে আদরে
ভগ্নাংশ নিদ্রায় ভগ্নাংশ জাগরণে
তন্দ্রাঘোরে তন্দ্রাহরণী দ্রাঘিমাংশকে দ্রাঘিমা করে
আয়ু পোড়ে আয়ু পোড়ে তবু উজ্জীবিত শিখা
মধ্যদিনে মধ্যগগন স্পর্শ করে অবাধ্য অসহ্য দহনে
চর্বচূষ্যলেহ্যপেয় কোষে কোষে ক্ষুধা মেটায়
স্নায়ুতে স্নায়ুতে ঝঙ্কার ওঠে, বিদ্যুচ্চমকের ঝাঁকুনি
স্বাতীনক্ষত্রের জল পড়ে গা'য়, জল যেতে চায় জলের গভীরে
কিছুই অসম্ভব নয় আর সপ্তভুবন পদতলে মূর্চ্ছাপ্রবণ
সমাধির থেকে উঠে আসে দুপুর একা একা
তোর লাবণ্যের ঢেউয়ে ঢেউয়ে, তোর রূপের অরূপে
বেহালাবাদিকা
একদিন ছিল খরস্রোতা, সুনাব্য
ষাঁড়াষাড়ির কোটালে প্লাবিত করেছে সমস্ত সংসার
মিটিয়েছে প্রিয়জন ক্ষুধা, বেড়েছে সাত ব্যঞ্জন
গেরস্থালিতে মোহমুগ্ধ ভাবব্যঞ্জনায়
আজ হে ঝড়ের পাখিনি গোধুলির লগ্নে
বেহালার ছড়ে সুর তুলে লন্ডভন্ড খন্ড করে দিচ্ছ
যত মেঘ যত স্রোত যত স্বরবিতান
মজে যাওয়া নদীটির অন্তঃস্থলে ফল্গুস্রোতও নেই
'নাব্যতা' শব্দটি হারিয়েছে অভিধান থেকে, শুধু কালো দিগন্তরেখা
পাখিনি যখন তখন উড়ে যেতে পারে
নীলকন্ঠ হয়ে অচেনা কৈলাসে, অজানা আকাশে।
দ্রাঘিমা সিঁড়ি
পাথরের সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসে অলকানন্দা
দ্রাঘিমা স্খলিত করে তোড়ে ভাসায় সমস্ত সমুখ
খরস্রোতা, সুনাব্য নদী হয়ে পাহাড় পর্বত ছাড়িয়ে
উপত্যকা পথে ছোটে মালভূমে, সমভূমে...
তারপর সমস্ত ভালোবাসা নিয়ে ঝপাং সমুদ্রে
সংসারের দু'কূল ভাসি যায় উজানে উজানে
ভাটিতে গেয়ে ওঠে ভাটিয়ালি জ্বালা জুড়াতে একান্নবর্তীর
পাগলি এখনও হৃৎকমল ভাসাতে পারে আশ্লেষে উচ্ছ্বাসে
গোধূলির অস্তরাগে জ্বেলে দিতে পারে
নুড়ি নুড়ি সংঘর্ষে চকমকি আলো
দ্রাঘিমাকে ডাকতে পারে স্খলনে, ধারনে
একেক নদী নাব্যতা স্রোত ধরে রাখে আজীবন
আর কবিকে দিয়ে যায় অনন্তের পান্ডুলিপি
ভালোবেসে, সুগভীর ভালোবেসে
যুবতীজোছনা অমল ভাসানে ডাকে কবিকে।