দোঁহা

অমিত চক্রবর্তীর কবিতা

 

নীল, নিষ্পাপ ক্ষেপণাস্ত্র

“এবার একটি পুরুষালি কবিতা লিখুন”, কারা যেন বলেছিল

এদিকে একটি ক্ষেপণাস্ত্র চুমুর অভাবে

আমি ক্রমশ নীল হয়ে যাচ্ছি

ক্রমশ গাঢ় নীল হবে সমুদ্র, দূরের নৌকো

যার রঙিন পতাকা সাজবে একফোঁটা হোলিখেলা,

যার দুলুনি নম্র হয়ে আসবে এত দূরে

এই ফ্যাকাশে বালিয়াড়িতে। এই যে অস্থিতির

স্বাধীনতা, পতনের স্বাধীনতা, কারা সরিয়েছে

বারপোস্ট, নেটজাল,

বিচ ভলিবল স্তব্ধ হয়ে যায়,

একটু বিরতির পর আবার হয়তো

প্রশ্ন উঠবে, আমি তখন ঘন আলো চাইব

একটি নীল চুমু চাইব, যার অভাবে আমি

পাহাড় ডিঙোনো, হাঙর ডিঙোনো চিল হব আবার

নিজেই সাজব একফালি নীল,

নিষ্পাপ ক্ষেপণাস্ত্র।



ঈশ্বর আমাদের কাল নতুন দুঃখ পাঠাবেন

আমরা হাঁটতে থাকি

বিজন সেতু, বুক কাঁপা, আমলকি বন এইসব পেরিয়ে

আমরা হাঁটতে থাকি, এখন বনানী, এইখানে তুমি একবার

খুঁজে পেয়েছিলে আমাকে। এখন বনানী পেরোলে

স্বাচ্ছন্দ্যও পেরোনো হয়, পা-হড়কানো রাগে

নৌকো থেকে দাঁড় স্লিপ করে ফিরে যায় জলে,

অথৈ পাতালে। ঈশ্বর আমাদের কাল নতুন দুঃখ পাঠাবেন,

মাথা ঘুরিয়ে দেওয়া নতুন ক্ষত, আজ বনানী,

আজ না-কুড়োনো পাতায় শিরশির,

আমরা হাঁটতে থাকি, না লেখা গদ্যে, না লেখা ছন্দে

আমাদের না বলা কথার পুনরাবৃত্তি।

 
 
নষ্ট কোরো না ভালোবাসা খুঁড়ে

 ক্ষুদ্র ডানা তোমার চঞ্চল গায়কপক্ষী,

এ জগতে ডানা এবং কান্না ছাড়া

সব কিছুই সুলভ, পুনরায় শুরু করো লিপি,

পুনরায় কানে কানে বলো যা আমি জানি,

যা আমি জানি না, কী যেন একটা রহস্যজনক,

কী যেন একটা গোপনীয় ত্রাস, অবিশ্বাসী মন

শালিকখোঁটা করে সমস্ত সংলাপ

সমস্ত মত বিনিময়,

হয়তো বা খুঁজে পায় সন্দেহ কি ‘আচ্ছা, কিন্তু’র

লম্বা লিস্ট, চোখ যখন অন্ধকারে

মৃত্যুর কথা ভাবছে, অন্ধকার বলছে

অকরুণ মৃত্যুর কথা, শ্রুতি আসুক তখন গানে,

হে চঞ্চল মেয়ে,

নষ্ট কোরো না ভালোবাসা খুঁড়ে, নষ্ট হয়ো না নিজে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন