প্রার্থনা
আর কোনো অজাতশত্রু নেই
তেমন কোনো ক্রোধও নেই
যা তোমার সদ্যস্নাত চোখে লেগে থাকা বিম্বিসারের চেয়েও দীর্ঘ অসহায়তার কথা মনে পড়ায়।
ঘাতক ছিলাম না
তবু জেগে উঠছে রিরংসা
দ্রুত দখল নিচ্ছে ভিতরের হ্রেষাধ্বনি
আজন্ম ফিরেছি শান্ত সুজাতার বেশে
দেখেছি আয়ুরেখার পাশ বরাবর শ্রমণের কোমল সুর
প্রেমের চেয়ে নতুন দহন নেই জেনেই, প্রস্তুত করেছি পরমান্ন
ভেসে আসে তোমার প্রশস্ত ললাট
পুড়ে যায় আমার বিজন কলিঙ্গ প্রান্তর
তোমার চোখের কথা মনে পড়লে, পুড়ে
যায় আমার বৃষ্টি নস্যাৎ করে অন্তর্গত রক্তে
ভিজে যাওয়ার দিন...
ছাই হয়ে ভেঙে যাক-দয়া নদী আর সূর্যাস্তের কাছে
আমাদের প্রিয় যত শ্রাবণের অসামান্য আয়োজন...
শীতে
বড়দিনের মাদাম মারিয়ার
টুকুটুকে লাল আর ফুসিয়া পিঙ্ক স্কার্ট
নিরূপদ্রবে অ্যালবামে গ্ৰুপফটোর মাঝখানে
শীতের কমলালেবুর কোয়ার মতো রসালো স্মৃতিগুচ্ছ
চোখের নগ্ন পালক থেকে উড়ে যায়
একগুচ্ছ পাখি, আরো বরফতর দেশের
ঝিলের দিকে...শীত এখন পরিযায়ী
বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ করে সিগারেটের প্যাকেট
তবুও অবৈধ জেনেই মাদামের
বুকে হাত রাখে চৌরঙ্গী দুপুরের অলস জীবন
এসবও ফিরিয়ে দিতে পারে একটা যথাযথ শীত
কবরে শুয়ে ভাবে মারিয়া
নিয়তি
কফি হাউসে বসে একদিন খুব বিদ্রুপ করেছিলে
আমি দেরিদা পড়িনি, ইউলিসিস কার লেখা বলতে পারিনি
-অবন ঠাকুরকে দেখলেই বুড়ো আঙলার জন্য কেঁদে বুক ভাসাই।
এখন বিকেলবেলা তুমি বৃষ্টি এলে জলের ভেতর ছপছপ করে একা হেঁটে যাও
চুপ করে দাঁড়িয়ে মেট্রো সিটি তোমায় দেখে---- মাঝে মধ্যে দুলে ওঠে
আমি রোজ আটটা তেত্রিশের ডাউন ট্রেন ধরে ঘরে ফিরে মুড়ি বাদাম খাই
হার্টের অসুখ নেই কোনো, আর
কাঁপা আলোয় দেখি বউয়ের নাকফুলে তোমার মুখ জোনাকের মতো জ্বলে-
আমি কি তোমায় তখন চিনেছিলাম সঠিক?