দোঁহা

কৌশিক সেনের কবিতা

 


জলসা

 

নষ্ট নাভির নীচে গান

কালের বন্দিশ,

স্বরলিপি থেকে উঠে আসা বিস্ময়

 

যে’সব গোধূলি অক্ষরবিহীন,

তাদের কারা যেন সুরেলা করে তুলেছে

 

আমিও আর বিলাপ করিনা তাই।

 

 

সমুদ্রবিজ্ঞান

 

সমুদ্র সংক্রান্ত যা’কিছু হিসাবনিকাশ

রেখে আসি পাতার গভীরে।

ক্ষণজন্মা সুরগুলি তখন ভার

মুষ্ঠিবদ্ধ হাতগুলি তখন অঙ্গার

 

সমুদ্র সংক্রান্ত জতগুলিন গান লেখা হয়েছিল

তার সরগমে কারা যেন পেট্রোল ঢেলে গেছে,

জানতেই পারিনি!

 

 

কুহু ও কেকা

 

মেঘ মেশে বায়সের কণ্ঠনালীতে

তোমাদের জলসায় ঘুণপোকা রাখি

 

স্তবগানে গলা সাধে কুহু ও কেকা

ফাল্গুনে বেড়ে ওঠে কোকিলশরীর

 

কা তব কান্তা আখতারি দায়

আলোয় গুগলমিটে ময়ূরীনিবাস

 

নষ্ট তালার পথে পথভোলা নদী

আম, তুই, পাখি আর হারমোনিয়াম।।

 

মঞ্চ

 

মাচায় এখন লোক ধরেনা আর

রাত জেগেছে পালাগানের নট

 

সুরের ভিতর ব্যস্ত কাঁটাতার

মাচার উপর দুরন্ত সংকট।

 

রাত জাগে মন, ছন্নছাড়া নবী

পান্নাসবুজ মান্নাবাবুর গান

 

শ্বেতপাথরের অবাক করা দেবী

মধ্যরাতের অবগাহন স্নান।

 

তারপরে নাচ, টায়রা বিবি আসে

পায়রা ওড়ে ধূসর কোনো মেঘে

 

মাচার আলোয় রক্তকমল ভাসে

স্বপ্ন ছোটার আলোর গতিবেগে।।

 

 

সঙ্গিতজ্ঞা

 

এখনও কি রোদ লাগে ভাঙা হারমোনিয়ামের রিডে!

ছায়ারা দীর্ঘ হতে হতে ঋতু

ছায়ারা দীর্ঘ হতে হতে গুঞ্জা ফুলের মালা গেঁথে চলে।

 

কতটুকু ছিল বল সুর, গলাসাধা ভোরাইচরিত!

কতটুকু বাসভূমি রেখে গেছে ভৈরবীসুরে

যতটা জীবন ছিল, তিনভাগই ভেসে গেছে…

 

তিনভাগই ভেসে গেছে ঘনীভূত শ্যাওলার ঘাটে

যেন কোনো গোড়ালিতে ঘষে চলা ঝামার জীবন!

 

রোদের গরলে যত মানতাসা ছিল,

কবেইতো নিয়ে গেছে কানাইমাষ্টার,

চুপিসারে, গান শেখাবার ছলে।

 

তবুও তো গান গাওয়া, কনেদেখা সাঁঝে

আধুনিক, রবীন্দ্রসংগীত।

তবুও তো তরী বাওয়া, অন্ধকারে। কৃষ্ণসায়রে!

 

ধুলোরাও শিখে গেছে সাদাকালো সুখ

রোদ আর ইমনকল্যাণ।


 

 

 

 

 

 

 

 

 



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন