দোঁহা

গোপাল চক্রবর্তীর কবিতা

 

 

বুনন

বসন্তের আগেই কবিরা ফুরিয়ে যাচ্ছেন।
ঘোর নগরের দেওয়ালে তবুও কে লিখে রেখেছে অক্ষয় বাণী-কবির মৃত্যু নেই!
সকালের কাগজ জুড়ে মৃত্যুর উদযাপন।
নাম না জানা শহরতলির ব্যথার শিরোনাম- কবি আর নেই
অমরত্বের দাবী ছেড়ে যান কবি, তীব্র শীতকাল
আমি ও একটি কবিহীন সকাল একান্ত মুখোমুখি!

মৃত্যুর কথা ভাবতে ভাবতে চোখে ভাসে তোমার শায়িত নশ্বর দেহ মাটির উঠোনে,
শিয়রের কোণে তুলসী চারা।
ধূপের অমৃত গন্ধ ভেসে আসে আর
হরির আকাশে বাজে মাথুর মৃদঙ্গ,
এখনই তোমায় কাঁধে তুলে নিয়ে যাবে তারা...
মৃত্যুর কথা ভাবতে ভাবতে অনেক কিছুই মনে পড়ছে
বৃষ্টি ভেজা ঠোঁট, প্রথম স্বর্গারোহণ
প্রথমবার হাঁটতে হাঁটতে কত গন্তব্যের শৃঙ্খল গেছি ভেঙে
দেরিতে ফিরেছি ঘরে।

মৃত্যুর কথা ভাবতে ভাবতে মনে পড়ে এমনই শীতের চক্রাবর্তে হারিয়ে এসেছি অলীক জীবনের ত্রাণ, আত্মার ভাগাভাগি শেষে
বিচ্ছিন্নতার পথ ধরে তুমিও গেলে।
মনে পড়ে নিঃসঙ্গ সন্ধ্যায় সন্ধানহীন তোমাকে ডেকেছি ভুল উচ্চারণে
দিক চক্রবালে নেই কোনো সাড়া
নিঃশব্দতা মেখে হেঁটে গেছি পাগলের মতো...

হাঁটতে হাঁটতে কবিরা চলে যাচ্ছেন
হাঁটতে হাঁটতে পার করে যাচ্ছেন বাংলা কবিতার মিলেনিয়া
কবি ফেরেন না,
আমি রোজ ঘরে ফিরি এখনও
একলা রাতের কবিতায় বাঁচিয়ে তুলি কবি ও একটি প্রেমিকাকে!
                                         

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন