দোঁহা

পাপড়ি দাস সরকারের গুচ্ছ কবিতা

 


এখনও বুকে আঙ্গুল বোলানো ক্ষত


বৃষ্টি নামছে তাই মনে হয় অবসর হলো অনন্ত মুহূর্তের
এখন কেউ তো আর ডাকবে না..
গাছেদের স্নান দেখতে ভালো লাগে বলে
বৃষ্টিকাতর  হই প্রতিটি ঋতুতে।
সন্তুর সাবান মাখা মেয়েটির
বয়েস বাড়ে না জেনে।
মনে মনে গাছেদের ও
ছন্দে এগিয়ে দিই হলুদ ও চন্দন


আমাদের কাটাকুটি সম্পর্ক কথা

রাস্তায় জমে আছে প্রাচীন ব্যার্থতা
এখনও ভাঙা অক্ষরে হেঁটে যাচ্ছে বিকেলের আলো হাতে মরচে, পায়ে মরচে
মাথার উপরে বনবন করে পাক খাচ্ছে ধূসর ঝড়
ঠোঁটের ভেতর লুকানো রয়েছে
তেপান্তরের মাঠ থেকে আনা লাল বটফল

জাগো মাটি জাগো জল!
থুতু আর রক্ত থেকে হাত বাড়াও ভালোবাসার ফসল

জানি, এখন ও এই পৃথিবীতে
বুকের ভিতরে কেউ আগলে রাখে খড়কুটো বাসার আশ্রয় ডানায় ভারি অন্ধকার নিয়ে কেউ ফিরে আসবে বলে


পম্পের ধ্বংসবশেষ

ভাঙা সাঁকোটি ও জুড়ে যাবে নতুন অর্থবছরে
জল এসে ঢুকবে পাশের গন্ধর্ব পাড়ায়
টানা মরশুমে যেখানে পৌঁছতে পারেনি মৌসুমীবায়ু কঙ্কন কিঙ্কিনী

বায়ুপ্রকল্পের ঘরে এই নিয়ে
আষাঢ়ের প্রেরনার গান, উপুড় গাত্র বরণ
সামান্য বৃষ্টিতেই বিগলিত
সর্বাঙ্গের বিনয়ী ছত্রাক

নতুন অর্থবছরে চামড়ায়
নিজেই সে বেঁধে নেবে ঠাট
বাজার রেশ ধরে উড়ে এসে বসবে পাতাটি
মুন্ডিত শ্রমণের মতো ছায়াদের গাছ



এ পৃথিবী ভরা আগাছায় এবং চারপাশের পরিবেশ দুর্গন্ধময়

কতবার মুঠো মুঠো ধুলো তুলে
নিজস্ব কৌশলে সোনা করতে চেয়েছি পারিনি, শুধু হাতই নোংরা হয়েছে
তবু এই যে ধুলোর স্পর্শ তাও কি কম!
কাঁচ ঘেরা আলমারির কাচ খোলা থাকলে টিকটিকি ঢোকে কি বই পড়ার লোভে বুঝি!
তাও ভালো তাই কাচ খুলে রাখি
লোকজন পড়ে না সাজিয়ে থাক
টিকটিকির এই আচরণে বড়ো বিস্ময় লাগে


সমান্তরাল কোনো পথ নেই

ঠিক কোন জায়গায় পৌঁছতে পেরেছি তোমার হৃদয়ের জানা হয়ে গেছে!বলবো?
তীর হতে পায়ে হেঁটে সমুদ্রের যতোটা যাওয়া যায়
তারপর মাথার উপর দিয়ে বয়ে যায় অগাধ জলরাশি
এবং  যতদূর চোখ যায় জলরাশির ফেনশির্য ঢেউ
ওই যে যতোটা পথ হেঁটে সমুদ্রের যতখানি পৌঁছতে পেরেছি
ততটুকুই জানা
আর সামনে জলরাশি অজানা।





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন