কাঁচা জনপদ
আজ সারাদিন আগুন ঝরেছে,
দাঁড় বাইতে বাইতে পুড়েছে নৌকা,
হঠাৎ এক পশলা বৃষ্টির কথা বলে
স্রোত ঝমঝমিয়ে মেঘের পথে
রামধনু দিয়ে নিরুদ্দেশ,
আমি তো জানতাম এমন হবে,
তাই তো নাচঘর সাজিয়ে রেখেছি,
প্রাচীন পানাজল নড়ে ওঠে—
ভাঙা সিঁড়ির ধাপে বসে মেয়েপুতুল,
তার হায়া-লজ্জা ঢেউয়ের বাঁকে বাঁকে
সংজ্ঞা হারায়, কলকাতা থেকে ট্রেন এসে
স্টেশনকে নাট্যমঞ্চ করে তোলে,
টিপটিপ বৃষ্টিটা তখন ধরে এসেছে—
চোরাগোপ্তা মানুষ পাতালের দিকে
দৌড় লাগায়, মীমাংসা হয় না ছদ্মবেশী
গ্রীষ্মের ঈর্ষার, কঙ্কাল হেঁটে যায় পল্লিপথে,
আঁচল খসা তারা বিস্কুটের মতো ডুবেই টুকরো হয়,
কাঁচা জনপদ বারোমাস সংকোচ করে মরে
শোকাহত হাঁপ
আমরা বিষ খেয়ে বেঁচে আছি,
অরক্ষিত গর্ভে আছি,
আর আছি গর্তে,
সারারাত আছি মান্দাসে,
আমাদের স্থাবর অস্থাবর পাহাড়ে-অরণ্যে
ছড়িয়ে আছে,
মরচে পড়া মুখ আমাদের দরমার ঘর থেকে
তাকিয়ে আছে নিরপেক্ষ মৃতদেহগুলির দিকে,
ওই যে ঘাতক ছেলের চোখে দাবানল,
ওই যে শিরদাঁড়া দমচাপা পলিথিনে মোড়া
অকল্যাণ,
রক্তের দাগ, শোকাহত হাঁপ—
আমরা শূন্যে রেখেছি ক্ষুধা,
ধ্বংসের মালকোঁচা কলঙ্কহীন,
আমরা ভস্ম হয়ে বেঁচে আছি
—