দোঁহা

বিশ্বজিৎ বাউনার কবিতা

 

 

আশ্বিনের অর্ঘ্যে 

স্নায়ুর নিরুচ্চারে মায়া প্রবাহের সে চির খনি,
টলোমলো নৌকার দিকে বাড়িয়ে রাখা স্থির জল।
কোজাগরী স্নিগ্ধতায় মাতৃময়ী রূপে চিরন্তন মণি,
পৃথিবীর শিশু বক্ষে রাখা সে অমৃতের সম্বল।

তুমি সেই চিরজীবী আলোর কাগজে আক্ষরিক
বোধের বিশল্যকরণীর মতো ক্ষত জুড়ে টীকা।
প্রতিফলনের আগুনে যেভাবে তাপ থাকে ঠিক,
তুমি সমূহ আঁধার ভেদ করে দীপ্যমান শিখা।

উজাড় বিন্যাসের আভূমি বিকিরণে তুমি বুঁদ,
তোমার চরণতলে সব অহমিকা রাখা হোক।
সুরধনী বিকেলে গ্রাস সব হয়ে যাক হলুদ--
স্বর্গের পাখি এসে খুঁটে নিক সে পৌরাণিক শোক।

জঠরের থেকে ঋণ নিয়ে চির ভাস্বর এই প্রাণ,
আশ্বিনের অর্ঘ্যে দেবী রূপে নাও তোমার আহ্বান।



বলপ্রদায়িনীরূপে

দিকে দিকে রাখা দীর্ঘ অমানিশা, দৃঢ় বিকৃতির
আদিম রূপায়ণে সজ্জিত আজ অসহায় কাল।
আসুরিক প্রশ্রয়ে নোঙর-ভাঙা বাতাসের ভিড়...
মুঠো মুঠো চোরাবালি দিয়ে ঘেরা জলের কপাল।

ছলনার কাঠে উঁই রেখে প্রলেপ দেয় সে বাহু--
মানুষের হিংসায় ঝরে না শিশিরের মৃত চোখ।
শোষণের দাহ্য ঘাটে জেগে আছে সে গহীন রাহু,
কাঠুরিয়াকে ভেবেছি গাছসম আমাদের লোক।

থেঁতলানো কলকেফুলে জড়িয়ে ভ্রমরের শব,
মধুমেহ অভিলাষে করাল ভঙ্গির জেগে ঘোর।
আত্মযুবকের সম্মুখে নেই উত্তরণের স্তব,
গুটিপোকা হয়ে ভেবেছি নিজের প্রজাপতি ভোর!

লেলিহান আঁধার দৃঢ়, পাথরের শোক মর্মরে।
এসো দেবী বলপ্রদায়িনীরূপে, সব ছিন্ন করে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন