দোঁহা

নিমাই জানার কবিতা

 

পরাধীন ও পর্ণমোচী চাঁদের কবিতা


টু এমজি ডিজিরন খাওয়ার পরও ধৃতরাষ্ট্র কোনদিন কুরুক্ষেত্র ছেড়ে যেতে পারেননি হস্তিনাপুরের দিকে

আমি দুহাত ফাঁক করে কোনদিন এক মুষ্টি জলের নিঃশর্ত পিপাসা মেটাতে পারি না, আসলে আমার মাথার ওপর কেউ যেন মজফরপুরের তিল রঙের রক্তাক্ত ত্রিশূল গেঁথে দিচ্ছে প্রতিটি রাতের বেলায়, অথচ আমি রোজ সকালে পর্ণমোচীর গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে শিমুলতলায় একগুচ্ছ রক্ত পাঁপড়ির তলায় মিলে রাখা অসমাঙ্গ পতাকা চিহ্নটির উপর উভয়লিঙ্গ চাঁদ হয়ে শুয়ে থাকি,
আমার গা থেকে তিন কোনা অসুখ বেরিয়ে যাচ্ছে,

আমাকে এখনো কেউ পর্বমধ্যহীন এক পুরোহিত ভেবে কুপিয়ে যায় সারারাত, আমার কমন্ডুল ভেঙে বেগবান ঘোড়া তৈরি করে ফেলেছে এ শীর্ণ মালাকার
রাতে পুড়ে যাওয়ার জন্য কতকগুলো আগুন ফলের পারদ সূত্র প্রয়োজন হয়ে পড়ছে আজকেও , আমি তখন সাইট্রেট শিকল হাতে বেঁধে ঝুলে থাকি কারাগারের নীল করিডোরের পিপাসার্ত পাখির স্পার্ম কাউন্টে
আজাদী গন্ধ বেশ দুর্গন্ধ বলেই মনে হয়, পুঁজ রক্তের ভেতর কখনো লোমশ পোকারা একাকী ঘুরে বেড়ায় সঙ্গমবিহীন সারা গায়ে মেখে নিতে পারি না, নিচে একটি দাঁড়াশ সাপ আরেকটা দাঁড়াস সাপের স্তনকে খামচে ধরছে পিরামিড বানাবে বলে

রাতের বেলায় কেউ দুটো টকটকে লাল চোখ থেকে ত্রিশূল অঙ্গানু বের করে আমাকেই ক্ষত করে দিয়ে যায় আমার অসুস্থতার দিনে, একটি ট্রাপিজিয়াম সারারাত দৌড়ে বেড়ায় অন্তক্ষরা গ্রন্থি থেকে বেরিয়ে
আমার মা একপ্রস্থ গুহার ভেতর থেকে বাইরে বেরিয়ে এসে আঁচল আলগা করে চিৎকার করে বলে ফেলে, "চলে আয় সবাই আমার  বৃত্তগুলো চিবিয়ে চিবিয়ে হাঁ করে খেয়ে ফেল তোরা"

কোন এক নীলকর রাখি বন্ধন ফুলের চাষাবাদ করছেন দেওয়াল জুড়ে, মাংসাশী খাদক আজও গিলোটিন আবিষ্কার করেন


 উপপাতালিক দ্রোহকাল ও হলুদ রঙের সন্ন্যাসীরা


অন্তঃকর্ণের সব গোপন কবিতা পড়ে নেওয়ার পরও আমি দেখেছি গভীর রাতের ঋষি অরবিন্দ জলীয় দ্রবণ ফেলে নিরালায় কোন দ্বীপান্তর আকাশের পানকৌড়ি গুনছেন

মৃত্যু রঙের উৎসবে এড়াতে সবাই ধূসর রঙের পালক আর কিছু হলুদ বিভাজিকার ভিতরে শুয়ে থাকা নগ্ন হরিণের চিরহরিৎ অরণ্য খোঁজার নেশায় আমরা সকলেই ৬ স্কয়ার ফিটের ভিতরে ধীরে ধীরে সংক্রমিত হয়ে উঠছি বারংবার
মৃত্যু বড় সুরক্ষিত বলেই জানালা দিয়ে ঘিরে রাখি তার কম্পাঙ্কের পা শব্দ
রাত্রি এলেই জমে থাকা নগ্ন ইতিহাসের পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা জুড়ে স্বরবর্ণেরা আজ গোপনে ইঙ্গিতে খুলে রাখে সেলুলার কাপালিক আর হিমোফিলিক উৎস্রোত

তোমার মত গোপন ভূগোল আর উপপাতালিক দ্রোহকাল পড়ে নিচ্ছে কোন ডাক্তার অথবা ব্রহ্মাস্ত্র মাথায় রাখার পর
নিজেকে কখনোই নিজের অধীন বলে মনে করিনি রাতের বেলায় কেউ কেউ অন্ধকারের অর্বাচীন পাখির মতো স্থির সমুদ্রগুপ্তের দিকে তাকিয়ে থাকে নিরালার একাকী গায়কের দিকে
কোন এক শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টির গান গেয়ে উঠি ঈশ্বর পুরুষের মতো, ত্রিভঙ্গ মূর্তির মতো, উন্মত্ত মহাকালের মতো
অথচ আমার গলার ভেতর থেকে কেউ একজন আত্মহত্যার দড়ি ঝুলিয়ে রক্তাক্ত করে ফেলবে আমার জিব, তবুও আমি নিজের কবিতা লিখতে পারিনি সঠিকভাবে

আমি এখনো সামাজিক বয়কটে আহত হয়েছি বলে কেউ আমার হলুদ বর্ণের সন্ন্যাস বান্ধব নেই
আসলে কালো ক্যাকটাসের আগুন জ্বেলেছি এই শ্বেত কণিকার বাগানে বসে
সহস্র অমীমাংসিত পাটিগণিত আপতন কোণের ঠোঁট নিয়ে আজও স্বরাজ খুঁজছে নিজের বিছানার চারপাশে

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন