দোঁহা

সাগরিকা শূরের কবিতা


শুদ্ধতম সুর  

 

তূণ কাঠের একটি যন্ত্র
চারখানা তারে অদ্ভুত মূর্ছনা জাগে,
এসবের মায়ায় মজে ভেবেছিলাম
আমিও জাদুকর হব কোনোদিন।

অথচ দাগ কাটা নেই,
আঙুলের পরিমাপ আর শ্রবণে
চিনে নিতে হয় স্বরক্ষেপ,
শুদ্ধতম সুর।

গুরু শ্রুতির আদেশ দেন,
বলেন, কান তৈরি হোক।
কোমল গান্ধার থেকে কোমল ধৈবত
অক্ষম আঙুল ঘষে চলি।

মধ্যযামিনীর কোলে বসে
একটি একটি করে স্বর ধ্বনিত হোক, চাই
চকিতে তার ছিন্ন হয়,
আয়নায় দেখে ফেলি নিজেরই বিবর্ণ মুখ।

রাত্রি অতিক্রান্ত প্রায়
এখনও শুদ্ধতম সুর
চেনা হল না আমার।


মা 

জল ভরতে গিয়ে
ফিল্টারের টিনে খোঁচা লাগে
কালশিটে পড়ে যায় পিঠে।
এখন এসব দাগ দেখাই না কাউকে,
নিজেও দেখিনা হামেশাই -

সন্ধে হলে চুল বেঁধে দেয় মা
দাগ দেখে কঁকিয়ে ওঠে,
কী হল! কী হল!
স্মিত হেসে বলি, কই! কিছু না তো!
শুশ্রূষায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে -

বরফ ঘষতে ঘষতে
গলা কেঁপে যায়,
কোথায় ব্যথা! আর কোথায়!
শান্ত হয়ে বলি, ব্যথা নেই!
আশ্বস্ত হয় না তবু

পেলব হাতের সেবা নিতে নিতে
অপরাপর ব্যথার কথা ভাবি,
মায়ের বিচলিত মুখ মনে পড়ে,
নিজের গোপনীয়তাকে ধন্যবাদ দিই -
স্মিত হেসে বলি,

"ভাগ্যিস সেসব দাগ তুমি
দেখোনি কখনো!"

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন