দোঁহা

প্রদীপ ঘোষের কবিতা

 


রাধাভাব

মালতী নিশিতে ফোঁটা পদ্মপাতায় ভোর। ও মেয়ে! আমি
যে বিকিয়ে গেছি কবেই। কিনেছে অমেয়, আলেয়া হাসিটি
তোর। আয়নায় আর দেখিনা তো মুখ, তেমন অনুরাগে।
জীবন আমার নাকি আমি জীবনের! কে জানে কে কার
অনুপম অনুভবে। প্রকৃত পুরুষ পাহাড়ের মত শাশ্বত,
অজর! প্রকৃতিও যেমন নদীর মতই প্রবাহিত। সেতু ছিল
কাশের বনের নাচন! কুহেলি মর্মর। বর্ষা, পেঁজা তুলো মেঘ নিষ্পেষিত।

লাজে মরি কতটুকু আর কইতে পারি সাঁই কও তো?
বলতে গেলেই বুকের কাঁপন সে ও যে ভীষণ অনাহুত।
জল পিয়ানোর সুরে যে পুলকসঞ্চার! এত বড় আকাশ
বুকে রাখি, নদী বলে তোর কিসের অভাব? দুটি পাতা
একটি কুঁড়ির জীবন বেশি কি চাওয়া? জীবন রে...বয়ে
যায় নিপাতনে সিদ্ধ মৃদুলা হাওয়া। মনে যারা বঞ্চিত
কিশলয় তাঁরা সবাই যে রাধাভাব। “রাধা-ভাব অঙ্গী করি
খুঁজি মুই হরি হরি। খোঁজার তো না হইল শেষ। আপন
মনেতে ধনি খুঁজহ পরশমণি। দর্শন হইবে সবিশেষ…”



রাগ যোগিয়া

কান্নার বুঁদ যদি এমন পান্না সবুজ
হৃদি চুনী আরক্ত,
কন্টকময় পথে ব্যর্থতার যাত্রা,পান্থ
তবু নয় আশাহত।

যে পথ শুধুই ঝড়ো পাতার কফিন
বহে মর্মর ধ্বনি,
সৃষ্টি অন্তিক সে আঁকা ছবি বিলোপ
হয়েছিল তা মানি।

শৈশব যখন কৈশোরের চাইতে বড়
কৈশোর যৌবনের,
মধ্যাবস্থায় পৌঢ়ত্বপ্রাপ্তি বিচিত্রতা এ
অনুচ্চ জীবনের !

কত জানা বাকি থেকে গেল, হিসেব
মেলেনি নিরালায়
বৈরাগী মন বৈশাখী দাবদাহ খুঁজেছি
উত্তুরে হাওয়ায়।

আশৈশব স্বপ্ন বুনেবুনে যে প্রস্ফুটিত
পদ্মের উন্মীলন
আজ তার পাপড়ি নিভৃতে বাস বীজ
নয়, আহত মন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন