পঞ্চব্যাঞ্জন
বৃন্দগান
হয়তো ভয় কিংবা ভক্তিতে নয়
একটু আলোকিত হতে। সপ্তাহের
সব বার-ই বড় ঠাকুরের। সকাল
বিকাল সন্ধ্যা মায় মধ্যরাতেও
এ মন্দিরের দরজা খোলা। এই
তুলসীতলায় কাঁসরঘন্টা বাজে না
পূজার তৈজসপত্রের শঙ্খ নিজেই
এখানে বিগ্রহ; কবিতাই তাঁর নিনাদ
ব্যক্তিগত পরিসর বলতে নেই। কী
অপরিসীম তাঁর ধৈর্য যেন নিমীলিত
চক্ষু সদা হাস্যময় যত্নশীল তথাগত।
আজ কিন্তু ভক্তকুলের আতিশয্যের
মুক্তিতে ছোট্ট বৈঠকখানার অন্যান্য
কেদারা-রা আর ভক্তবৃন্দের উপদ্রুত
নয় জেনে প্রফুল্লচিত্তে নিজেদের
মধ্যে নিভৃত গল্পগাছা আলাপিনীতে
মশগুল। শুধু বিগ্রহর নির্দিষ্ট বসবার
কেদারাটি আজো প্রতীক্ষায় আকুল।
কুশল বিনিময়
হলধর দাদা আমাদের এতদঅঞ্চলের
মান্যিগণ্যি মানুষ। হাটে দেখা হয়েছিল
চুট্টায় টান দিয়ে এক মুখ ধোঁয়া ছেড়ে
জিজ্ঞাসা করলেন, ওহে হরেণ খবর কী?
আমি আড়ষ্ট, সালাম নিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম
অনেককিছু বলার ছিল। ছাগল তিনটে
বাচ্চা দিয়েছে, চাইলে এখন বেশ
কিছুদিন দুধ দুইয়ে আপনার বাড়িতে...
সকালেই গাছ থেকে তিনটে বড় ইঁচড়
কেটে নামিয়েছি, তাঁর বাড়িতে একটা
দিয়ে আসব ইত্যাদি। কিন্তু চোখ তুলতে
দেখলাম পলকে তিনি অনেকদূরে চলে
গেছেন। শুধু তাঁর ছেড়ে যাওয়া ধোঁয়ার
সঙ্গে আমার উত্তর, সালামও মিলিয়ে গেল।
ভিআইপি রোড
মঞ্চে মাননীয় মন্ত্রী উচ্চৈঃস্বরে
প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন
সমর্থকেরা রাজপথের যানবাহন,
প্রাপ্তির স্বপ্নে সাঁই সাঁই উভয়দিকে
এই পর্যন্ত সব ঠিকঠাক-ই ছিল
এরপর তিনি তাঁকে ভোট না দিলে
কী কী পরিষেবা থেকে আমরা
উলুখাগড়ারা বঞ্চিত হবো ইত্যাদি
বলতে আরম্ভ করলে রাস্তা চকচক
করে উঠলো। আমরা ধুলোবালিরা
প্রান্তিক। রাস্তার দু'ই প্রান্তে জবুথবু।
জবাফুল
গোলাপ কিন্তু কখনও বলে না আমায় নিয়ে আদিখ্যেতা করো। উল্টে চাটুকারদের দূরে রাখতে কাঁটা বিছিয়ে রেখেছে। অথচ ছাগল পাতা খায়, ফুল খায় তবু মায়ের পায়ে রাঙা হয়ে উঠতে পরাগের নির্লজ্জ নির্ঘোষ নুমাইশ
দেখে বেলি, টগর, রজনীগন্ধাদের অশ্লীলতার অভিযোগ আদালতে ধর্মাবতার গ্রহণ করলেন।
ফলোয়ার্স
ক্ষমতার জোরে কথা বললেই তা সত্যি হয়ে যায় না। সত্য
কথা জোরে বলবার প্রয়োজনও পড়ে না। তবে স্তাবকদের
কল্যাণে ক্যানভাসে রঙে ডোবানো তুলি ধরে রাখা হাত
হ্যাঁচ্চোতে নড়ে গিয়ে আঁকিবুঁকির রেখাঙ্কনকেই দেখাদেখি
পিকাসোর কিউবিজমের মতো ভেবে তুমিও বলেছো ছবিতা।
জ্বরের ঘোরে বকা প্রলাপ, লিপিতে ঢেলে বোঝালে বুঝেছো
এ নিশ্চয়ই শক্তির মতো কবিতা। কিন্তু শব্দের পাশে শব্দ বসে
যে পঙক্তি বুঝে উঠতে পারছো না একি শব্দজব্দ নাকি সুদকু
ধাঁধা। কিন্তু অনেক লাইক কমেন্টস দেখে ভেবলে গেলেও
কিছুই না বুঝতে পারা তুমি-ই বা নিরস্ত্র থাকবে কীভাবে?
অনেক ভেবেচিন্তে মাথা চুলকে লিখলে, অসাধারণ।