দোঁহা

বিশ্বজিৎ বাউনার কবিতা

 


হে বিস্মৃত বই

আপাত ছাই হয়ে আছে অক্ষর সেই সময়ের,
ঘনীভূত কুয়াশা ঠেলে রোদ ভেঙে গেছে বিকেলে।
বেদুইন জিঙ্গাসায় দ্রব স্মৃতির কোটরে ফের--
পুঁতির মালার মতো আলো পাই সব ছাই জ্বেলে।
মান্দাস-মুগ্ধতা ভেসে ওঠে লগি ঠেলে কিনারায়,
জল তার বুননের দোতারা রাখে স্নায়ুর নীড়ে।
যাকে ভেবেছি খড়কুটো, তার অতল দোলনায়
প্রতীয়মান হয়ে উঠি সকল শূন্য থেকে ছিঁড়ে।
সেই স্থাপনার নিরিখে আয়ু নিভৃতে প্রসবিনী,
সজাগ দীক্ষার জৈব জলে ভাসে যেন হাঁস-ফুল।
ঋণী পাঠশালায় সে অবদান কতটুকু চিনি?
অবজ্ঞায় নিজেকেই রাখা দেখি বঞ্চিত তুমূল।
পাথেয় করে রাখি বোধ, যাকে ভাবি রোজ ছোঁবই।
অক্ষরের আলো-দানা জুড়ে ভাসে সে বিস্মৃত বই।


বিস্মৃত লেখকের প্রতি

চ্যুত ডানার খনিজ থেকে উঠে আসি আমি ফের-
দ্রাব্যের বিভ্রম থেকে রক্ষা করো, মহাকাল বৈরী।
প্রবাহের মন্থনে তোমাকেই সর্বদা পাই টের,
ক্ষতজীবী বৃত্তে আলোর সেনা, আমরা সব তৈরী।
আগুন শেষমেষ উগরায় ছাই, ধূসর ধোঁয়া...
সীমিত প্রাপক থেকে মাটি জল তিলকের মতো।
সেই বুদবুদ ভাঙনের দৃশ্যে করিনা পরোয়া,
ডানা থেকে অক্ষর টাঙাই আকাশেই অবিরত।
প্রাপ্তির বিরহে অচঞ্চল থাকি, ত্যাগে অকপট।
অভিজ্ঞ মৈথুন থেকে নিত্য খুঁটে নিই দৈব হাড়,
অস্বীকার সে বৈঠায় জানি তবু নুয়ে থাকে তট।
জানি, জল থেকে জলে গঠিত হয় ক্রমে পাহাড়।
আয়ু প্রণত রাখি সব বিস্মৃত লেখকের প্রতি,
ঋণ স্বীকারে কখনোই হয় না নবীনের ক্ষতি।




 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন