১.
আজকাল সকালে মোবাইল ঘুম থেকে ওঠায়
ফোনের অ্যালার্মে নয়—বসের মেসেজে।
“সকাল সাতটায় একটা জুম মিটিং আছে।”
ক্যামেরা অন করে, গলা খাঁকরি দিয়ে বলি,
“ভেরি প্রোডাক্টিভ মর্নিং, স্যার”
ওয়ার্ক-ফ্রম-হোম করার একমাত্র লাভ—প্যান্ট না পরলেও চলে
এবং একমাত্র ভয়—ক্যামেরাটা হঠাৎ নীচে পড়ে না যায়!
চায়ের দোকানে এখন লোকেরা চা কম খায়,
বেশি করে খায় কথার গুঞ্জন, চলে মিথ্যের বেসাতি
"দেশটা একেবারে রসাতলে গেছে!" বলে একজন—
পরদিনই শহরে তার দ্বিতীয় ফ্ল্যাটটি বুক করলো গোপনে
অন্য একজন বলে —“এখনকার শিক্ষা সত্যিই অর্থহীন!”
তবু তার ছেলে-মেয়ে ১০টা নামী কোচিং সেন্টারে পড়ছে
একটা মানুষ হেঁটে যাচ্ছে রাস্তায়, কানে হেডফোন, মুখে হাসি,
পাশের লোকজন ভাবছে, “পাগল!”
আসলে সে হাসছে হোয়াটসঅ্যাপে একটা মিম দেখে
যেখানে রামগরুড় কাঁদছে কারণ তার ইন্সুরেন্স-প্রিমিয়াম বাকি
হাসি এখন রিল ভিডিও,
পাঁচ সেকেন্ডে হেসে ফেলো, নয়তো স্ক্রল করো
জীবনটা এত ছোট, যে অ্যান্ড্রয়েড আপডেট নেওয়ার আগে
হেসে নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
বন্ধুদের আড্ডায় মাঝে মাঝে কেউ বলে
“একটা ফানি জোক বল।” কিভাবে হাসানো যায় ভাবছি
তখন নিজের জীবনের কিস্তির হিসেব বলতে শুরু করি—
হঠাৎ সবাই হেসে ওঠে, ভাবে সেটা আসলে কমেডি!
২.
আমরা এখন হ্যাশট্যাগে হাসি, ইমোজিতে কাঁদি
আর প্রেম করে গুগল ম্যাপে লোকেশন শেয়ার করি
আমাদের 'লাভ ইউ' মানে—লো ব্যাটারি ইউজার
একজন দার্শনিক আজকাল শুধুই রিল বানান,
টাইটেল দেন “আমাদের আত্মা কি আসলে অ্যালগরিদম?”
আর ভিউ কম পেলে রাগে-দুঃখে
পেঁয়াজ কাটেন লাইভ ভিডিওতে!
একটা স্মার্টফোন আত্মহত্যা করল—
কারণ তার ইউজার আবার পুরানো নোকিয়ায় ফিরে গেছে!
সবাই কাঁদল, সেই স্মার্টফোনের শেষ স্ট্যাটাস ছিল:
“No space left in memory, even for feelings.”
এই শেষ লাইনটি আপাতত না পড়লেও চলবে
কারণ, এই কবিতার শেষ লাইনে কিছুই নেই,
ঠিক যেমন আমাদের জীবনের অনেক জরুরি কথা
স্মার্টফোনের ড্রাফটেই থেকে যায়!